গফরগাঁওয়ের ঐতিহাসিক পটভূমি বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন রাজ বংশের শাসনের ক্রমবিবর্তনের বৈশিষ্ট্য অলংকৃত। গফরগাঁও বঙ্গ দেশের একটি অংশ বিধায় এখানেও আর্য্যদের বসতি ছিল বলে অনুমান করা যায়। চতুর্থ শতাব্দীতে রাজা সমুদ্রগুপ্ত সিংহাসনে আরোহন করেন। তিনি সমতট (ফরিদপুর-ঢাকা-পশ্চিম ময়মনসিংহের দক্ষিণ অংশ অর্থাৎ ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিমাংশ) দখল করেন। ভাওয়ালের পাল রাজাগণ দশম শতাব্দীর প্রারম্ভ হতে একাদশ শতাব্দীর প্রথম দিক পর্যন্ত ১২১বছর এই অঞ্চল শাসন করেন। পাল রাজাদের পরে ইহা হিন্দু শাসনে আসে। বৈদিক রাজত্বকালেই শাসন কার্যের সুবিধার জন্য বঙ্গদেশকে ৫টি ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। ১) বরেন্দ্র, ২) বাডুগী, ৩) বঙ্গ ৪) রাঢ় ৫) মিথিলা। বঙ্গ বিভাগটি ছিল করতোয়া ও ব্রহ্মপুত্র মধ্যবর্তী ভূ-ভাগ। আমাদের আলোচ্য গফরগাঁও এলাকা সেন রাজাদের অধীনে ছিল।
১৩৯২ সালে সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রাজত্বকালে এই এলাকা মুসলিম শাসনে আসে। প্রশাসনিক শাসনকর্তা ছিলেন জানে আলম খান। তাহার রাজধানী ছিল বর্তমান দিঘিরপাড় গ্রামে। সেই সময় গফর শাহ নামে একজন দরবেশ ছিলেন, তার নামানুসারে গফরগাঁও নাম করণ করা হয়। ১৮১৩ সালে সর্বপ্রথম ময়মনসিংহের জেলা কালেক্টর রবার্ট মিডফোর্ডের নির্দেশে গফরগাঁও পাইক বরকন্দাজ নিয়া একটি থানা স্থাপন করা হয়। ১৮১৫ সালে ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ার সাহেব থানায় চৌকিদারী প্রথা চালু করেন। গফরগাঁও থানায় ১৩ জন চৌকিদার ছিল। ১৯৮২ সালে গফরগাঁওকে মান উন্নীত থানা হিসাবে ঘোষনা করা হয় ও উক্ত সালের ৭ নভেম্বর উদ্ভোধন করেন রিয়াল এডমিরাল মাহবুব আলী খান। ১৯৮৩ সালে উপজেলা কার্যক্রম চালু হয়। প্রথম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন জনাব আবুল কাশেম, ও প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন জনাব এস,এম মুর্শেদ।